নিজস্ব সংবাদদাতা | | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ১৬ জানুয়ারী ২০২৪ ১২ : ৩০

১৬ জানুয়ারি প্রতি বছর একমুঠো বসন্ত ছড়িয়ে দেয় গঙ্গোপাধ্যায় বাড়িতে। সেই ১৯৯৩ সাল থেকে। ৩১ বছর পরেও সেই বসন্ত কী টাটকা! ২০২৪-এর ১৬ জানুয়ারি শহরের শীতলতম দিন। ১৯৯৩-এর সেই দিনটা কেমন ছিল? বিয়ের জন্মদিনে সে কথা ভাগ করে নিয়েছেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। ছোট্ট বার্তায় লিখেছেন, ‘শুরুতে ৫ বছর ধরে চলেছিলো অ্যাডমিশন টেস্ট। তারপর বহু প্রচেষ্টা ও পরিশ্রমের পর আমরা ১৯৯৩ সালে জয়েন করেছিলাম এই ১৬ই জানুয়ারিতে, সন্ধ্যাবেলায় থিয়েটার রোডে চূর্ণীর বাড়িতে। বেশ সেজেগুজে গিয়েছিলাম, পৌঁছে দেখি ওর বাড়ীর গেটে লেখা ‘চূর্ণীর বিয়ে’! সেই ফুলের গেটটা আমার জীবন বিলকুল বদলে দিলো!’ আজকাল ডট ইন চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়ের থেকে জানতে যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে। বাকিটুকু তিনি বললেন, ‘‘ওই গেটটা কৌশিক নিজের হাতে সাজিয়েছিল। ১৫ জানুয়ারি আমাদের বাড়িতে গিয়ে। পরের দিনে বরের সাজে এল। বিয়ে হল আমাদের।’’

বিশেষ দিনে গঙ্গোপাধ্যায় দম্পতি পা রেখেছিলেন পরিচালক-অভিনেত্রীর বাবার বাড়িতে। দেখা করেন প্রবীণ অভিনেতা বাবার সঙ্গে। আশীর্বাদ নিতে। করোনা কেড়ে নিয়েছে চূর্ণীর মা সুদীপ্তা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এদিন তাঁর ছবির কাছে দাঁড়িয়ে কৌশিক বলেছেন, ‘‘তুমিই সব। তুমি না থাকলে আমার এত ভাল বৌটাকেই পেতাম না।’’ এদিন সকাল থেকে কৌশিক-চূর্ণী আবারও আগের দিনের মতোই একে অন্যের। বুধবার শুটে বেরিয়ে যাবেন পরিচালক-অভিনেতা। তার তোড়জোড় চলছে। ব্যাগ গুছোচ্ছেন তিনি। পাশে ৩১ বছরের সহধর্মিণী। বিকেলে বন্ধুদের বাড়িতে যাব। চূর্ণীর কথায়, ‘‘সকাল সকাল বন্ধু ফোন করে জানিয়েছে, তোমাদের জন্য উপহার কিনেছি। দুই সেট কাঁসার বাসন। আজ সেটার উদ্বোধন।’’ অর্থাৎ, তাঁরা ভরপুর বাঙালি রান্নায় বন্ধু আপ্যায়ন জানাবেন তারকা দম্পতিকে।

প্রতি বছর এই দিনে কৌশিক সামাজিক পাতায় মিষ্টি বার্তা দেন চূর্ণীকে। যেমন এবছর লিখেছেন, ‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু হওয়া এই বিয়ের কোর্সটা আজীবনের। এই দুই ছাত্র-ছাত্রীর কারোরই এই লেখাপড়াটা ছাড়ার ইচ্ছে নেই। এতে পড়ানো হয় বন্ধুতা, সমবেদনা, সততা, নম্রতা, সহনশীলতা, আবেগ, ক্ষমা , আদরের মত আরো অনেক অনেক চ্যাপ্টার! অদ্ভুত এক বই যার কোনো আকার নেই, পেজ নাম্বার নেই! একটা পাতা থেকে যেন শয় শয় পাতা খুলে খুলে বের হয়ে আসছে।’ তারকা স্বামীর সঙ্গে ঘরকন্না কত সুখের? কৌশিকের বার্তার প্রেক্ষিতেই চূর্ণীর কাছে প্রশ্ন রেখেছিল আজকাল ডট ইন। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘আমাদের বাড়িটা সিনেমাময়। সারাক্ষণ দেশে-বিদেশের ছায়াছবি নিয়ে আলোচনা চলছে। এবং চলতেই থাকছে। আমি, কৌশিক, উজান তিনজনেই তখন বাড়িঘর-সংসারের কথা ভুলে যাই। একসময় হুঁশ ফেরে। ফিরিয়ে আনতে হয়। তখন আমরা ঘোরতর সংসারী।’’

এই মুহূর্তে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় যেমন একের পর এক ছবি পরিচালনা করছেন তেমনই চুটিয়ে অভিনয়ও করছেন। এত ব্যস্ততার জেরে অনেক সময়েই অতি আপনজনেরাও ফোনে পান না তাঁকে। ফোনে মেসেজ পাঠিয়ে রাখতে হয়, ‘ফাঁকা হলে ফোন কোরো’। যদি শুধুই অধ্যাপক স্বামী হতেন বেশি খুশি হতেন চূর্ণী? কৌশিক আরও বেশি মনোযোগ দিতেন, গুছিয়ে সংসার করতেন...! পর্দার ‘অধ্বাঙ্গিনী’ বাস্তবে মিলেমিশে একাকার, ‘‘কৌশিক কোনও দিন বিনোদন দুনিয়া থেকে দূরে নেই। আগে পড়ানোর পাশাপাশি লেখালিখি করত। চিত্রনাট্য লিখত। ও বরাবর গল্প লিখতে, গল্প বলতে খুব ভালবাসে। এই কাজ করবে বলে দু’বার চাকরি ছেড়েছে। তারপর পাকাপাকি চলে এসেছ।’’ 



তারপর একটু থেমে গাঢ় গলায় স্বীকার করে নিলেন, ‘‘কৌশিক যেমনই হোক, আমার ওকেই লাগে। কৌশিক ছাড়া আমার একটা মুহূর্ত চলে না।’’